ব্রেকিং নিউজ

মোহাম্মদ চুন্নু
প্রকাশ : Nov 11, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

আইসিটি দক্ষতা গড়ে তুলেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে শিক্ষার্থীরা : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

ওশান নিউজ  প্রতিবেদক : রাজধানীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রশিক্ষকদের জন্য আয়োজিত ‘ট্রেইনার্স ট্রেনিং’ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই আইসিটি কোর্স ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কোডিং, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড ভেসড কম্পিউটিং, ডেটা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ডিজিটাল টুল ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা চাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে অধিকতর টেকনোলজি বিষয়ক দক্ষতা ও শিক্ষা্র জন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ তৈরি করতে।

বিশেষ সহকারী আর‌ও বলেন, বাংলাদেশকে টেনে তুলতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে তুলতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন সম্ভব নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কে কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য এটুআই তে আইসিটি সেল খোলা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, অনেক সময় প্রযুক্তি বিষয়ক পরিকল্পনা ক্লাসরুম পর্যন্ত পৌঁছায় না। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই দূরত্ব কমবে এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রযুক্তি সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. কাইয়ুম আরা বেগম বলেন, দেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সেই লক্ষ্যের দিকে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারব।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এএসএম আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই পরিবারের প্রথম প্রজন্মের উচ্চশিক্ষার্থী। আইসিটি দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তারা নিজেদের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারবে। চলতি শিক্ষাবর্ষে বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্সে অংশ নিচ্ছে প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী। আগামী শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (পাশ) কোর্সেও এই পাঠ্যক্রম চালু হলে আরও প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী যুক্ত হবে। 

পর্যায়ক্রমে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষে এডভান্স আইসিটি কোর্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নতমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

আয়োজকদের তথ্যমতে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২ হাজার ২৫৭টি কলেজে প্রায় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই বিপুল শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তিদক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ২০২৪২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের সব বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্স চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। 

উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আইসিটি দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই কোর্স কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য এটুআই-এর সহযোগিতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ বছরের ৩ সেপ্টেম্বর আইসিটি কোর্স বাস্তবায়নের একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করে। 

ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় অনলাইন ও সরাসরি শ্রেণিকক্ষ মিলিয়ে একটি মিশ্র (ব্লেন্ডেড) প্রশিক্ষণ পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছে। এই মডেলের ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে মূল প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে তাঁরা মাস্টার ট্রেইনার ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন। ধাপে ধাপে এই প্রশিক্ষণ সারাদেশের কলেজে প্রসারিত হবে।

প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ছিল আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য মূল প্রশিক্ষকদের প্রস্তুত করা, ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়া, অনলাইন টুল ব্যবহার ও মূল্যায়ন কাঠামো সম্পর্কে অভিন্ন ধারণা তৈরি করা। একই সঙ্গে মাস্টার ট্রেইনার ও শিক্ষক পর্যায়ের পরবর্তী প্রশিক্ষণ আয়োজনের প্রস্তুতিও এই কর্মশালার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শেষে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষকদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা জানান, আইসিটি কোর্স বাস্তবায়ন গাইডলাইন, অনলাইন টুল ব্যবহার ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে এই প্রশিক্ষণ তাঁদের জন্য অত্যন্ত ব্যবহারিক ও সময়োপযোগী হয়েছে।

উল্লেখ্য, এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় কর্মশালাটি আয়োজন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত শিক্ষক ও আইসিটি বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ৯০ জন মূল প্রশিক্ষক অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ,উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা, এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহা: আব্দুর রফিক এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ দীপিকা শর্মা উপস্থিত ছিলেন।  

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কোর্ট ফি’র ২০% আইনজীবী কল্যাণ তহবিলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা আইনজ

1

নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় পরীক্ষা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

2

সোশ্যাল মিডিয়ার মিছিলের ভিডিও বাস্তব নয়: ডিএমপি কমিশনার

3

সালমান শাহ হত্যা মামলায় দ্রুত বিচার ও আসামি গ্রেপ্তারের দাবি

4

ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পূর্ণ প্রস্তুতিতে সরকার

5

ভ্যাপ–ইসিগারেটে এমডিএমবি বিক্রি: মালয়েশিয়া-চক্রের মূলহোতাসহ

6

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কণ্ঠ রোধ করতেই হাদিকে গুলি: সার

7

হাদি হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল হবে ৭ জানুয়ারির মধ্যে: আইজি

8

ভি৬০ লাইট: এক ফ্রেমে ঋতুর চার রঙ

9

বাড়িভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট শিক্ষকরা, আন্দোলন স্থগি

10

করোনাকালে বাড়লেও ক্রমেই কমছে স্টার্টআপে বিনিয়োগ, নীতি সহজ কর

11

নতুন জীবনে পা রাখলেন নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান

12

বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজের আগ্রহ জানিয়েছে ভুটান: মি

13

রাজধানীতে সস্তা ডিম-সবজি, কিন্তু মাছ-মাংসের দাম উর্ধ্বমুখী

14

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ২ লাখ ২৩ হাজার প্রবাসী ভোটার পো

15

ভারতের সঙ্গে কথা হবে চোখে চোখ রেখে

16

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের

17

ভাগ্য পরিবর্তন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নির্বাচনের ওপ

18

বিশুদ্ধ দুধের শক্তি, সতেজতার প্রতিশ্রুতি ওশান ডেইরি ফার্মেন্

19

তারেক রহমানের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন গণতান্ত্রিক যাত্রার নতুন অ

20