ওশান নিউজ ডেস্ক : বিরল খনিজ শিল্পে
চীনের আধিপত্য মোকাবিলা করার উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তাই বিরল খনিজ ও
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে এবার যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান
একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশ
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উৎপাদনে সহায়তা করার জন্য নীতি, বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং সমন্বিত বিনিয়োগের মাধ্যমে সহযোগিতা
করতে সম্মত হয়েছে।
টোকিওতে আজ মঙ্গলবার মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচি
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও বিরল মৃত্তিকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি কাঠামো চুক্তি
স্বাক্ষর করেছেন।
জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ট্রাম্প প্রথমবারের মতো তাকাইচির সাথে দেখা করার সময় এই চুক্তিটি করা হয়।
যেখানে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা
এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর আলোকপাত করা হয়েছিল।
বিবিসি বলছে, তাকাইচির জন্য
প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে দেখা এই বৈঠকে দুই নেতা তাদের দেশের মধ্যে জোটের জন্য
একটি নতুন ‘স্বর্ণযুগের’ সূচনা করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি পণ্য
রপ্তানিতে এখন ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে,
যা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল কিন্তু মঙ্গলবারই চূড়ান্ত হয়েছে।
টোকিওতে বৈঠকের সময় জাপানের প্রথম নারী
নেতা সানা তাকাইচির প্রশংসা করেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন
লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাম্পের
বন্ধু এবং গল্ফিং অংশীদার প্রয়াত জাপানি নেতা শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ মিত্র তাকাইচি
বলেছেন, তিনি
ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করবেন।
রয়টার্সের মতে, তাকাইচি এই বছরের
শুরুতে স্বাক্ষরিত ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে মার্কিন বিনিয়োগের একটি প্যাকেজ
অফার করবেন বলে আশা করা হচ্ছে,
যার মধ্যে রয়েছে জাহাজ নির্মাণ এবং মার্কিন সয়াবিন, প্রাকৃতিক গ্যাস
এবং পিকআপ ট্রাকের বর্ধিত ক্রয়।
জাপানের পর, ট্রাম্প দক্ষিণ
কোরিয়ায় উড়ে যাবেন, যেখানে
তিনি চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করবেন।
বর্তমানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ বিরল খনিজ আহরণ এবং ৯০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাতকরণ একাই নিয়ন্ত্রণ করে চীন।
এই খনিজগুলো
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়ি, সব ক্ষেত্রেই
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি এই খনিজ হাতে
পেতে চীনা সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল,
যা তাদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন
শুল্কনীতি ও দুই দেশের বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের জেরে চীন সম্প্রতি বিরল খনিজ সরবরাহ
সীমিত করার পদক্ষেপ নেওয়ার পর এ ঝুঁকি আরো বেড়েছে।
ওয়াশিংটন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, যুক্তরাষ্ট্র
মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড
এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা বেশিরভাগ
ইলেকট্রনিক্স, বৈদ্যুতিক
গাড়ি এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়।
জাপানে প্রচুর পরিমাণে বিরল মৃত্তিকা
খনিজ রয়েছে বলে জানা যায়,
তবে এর বেশিরভাগই সমুদ্রের নিচে রয়েছে,
যার ফলে খনন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন