ওশান নিউজ প্রতিবেদক : বাংলা ভাষার জন্য এই প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) পূর্ণাঙ্গ প্ল্যাটফর্ম ‘কাগজ ডট এআই (kagoj.ai)’ চালু হয়েছে। একইসঙ্গে উন্মোচন করা হয়েছে নতুন বাংলা ফন্ট ‘জুলাই’।
বাংলা ভাষাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে যুক্ত করার লক্ষ্যেই এই দুই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ ১৫ ডিসেম্বর সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দুটি প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, গত দুই সপ্তাহে চার হাজার মানুষ পরীক্ষামূলকভাবে ‘কাগজ ডট এআই’ ব্যবহার করেছেন এবং ভালো ফল পেয়েছেন। বাংলা ভাষাকে সবার জন্য উন্মুক্ত করতে এই প্ল্যাটফর্মের এপিআই উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সোর্স কোডও উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভাষার স্থানীয় সাংস্কৃতিক ধারা অক্ষুণ্ন রাখতে শিগগিরই দেশের প্রতিটি নৃগোষ্ঠীর ভাষার ১০ হাজার ওরাল মিনিট সংগ্রহ করা হবে।
এর মাধ্যমে একটি বাংলা এলএলএম (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। ডেভেলপমেন্ট জার্নি ও ইকোসিস্টেমে ভাষাগুলোকে যুক্ত করতে পারলে সাইবার স্পেসে সেগুলোকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। বর্তমানে যেসব টুল নিয়ে কাজ চলছে, সেগুলোর এপিআই ব্যবহারকারীদের কাছে উন্মুক্ত করার কথাও জানান তিনি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, যত বেশি ব্যবহারকারী এসব টুল ব্যবহার করবেন, তত বেশি সমস্যা চিহ্নিত হবে এবং এর ফলে উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও ডেভেলপমেন্টের গতি আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘কাগজ ডট এআই’ বাংলা ভাষাভিত্তিক লেখালেখি, দাপ্তরিক নথি প্রস্তুত, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ এবং কনটেন্ট তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
বাংলা ভাষার ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর আগে বাংলা ভাষার জন্য এ ধরনের কোনো পূর্ণাঙ্গ এআই প্ল্যাটফর্ম চালু হয়নি।
এছাড়া নতুন বাংলা ফন্ট ‘জুলাই’ দাপ্তরিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই ফন্ট কম্পিউটারনির্ভর বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বিদ্যমান নানা সীমাবদ্ধতা দূর করতে সহায়ক হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জহিরুল ইসলামসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
মন্তব্য করুন