ব্রেকিং নিউজ

মোহাম্মদ চুন্নু
প্রকাশ : Nov 22, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ পেশাদারির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ওশান নিউজ প্রতিবেদক : আসন্ন নির্বাচন নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর করতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক এবং নিয়মতান্ত্রিক নেতত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী তাদের পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে দেশের জন্য ত্যাগ ও তৎপরতার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখবে। 

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি। 

২১ নভেম্বর শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত বৈকালিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা শিগগিরই একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা করব। সেটিই আমাদের স্বপ্ন। নির্বাচন যেন সুন্দর, আনন্দমুখর, উৎসবমুখর হয়, সুন্দর যাত্রাপথ রওনা করে দিতে পারে, সেটার জন্য আমরা সবাই চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে ভূমিকা রাখবে। নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে বলে আমার বিশ্বাস। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দক্ষতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করবে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বীরা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে আহত ও শহীদদের পরিবারের সদস্য, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও তাদেরে পরিবারের সদস্য, কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও গত বছর অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবার ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।

গতবছরের মত এবারও সেনাকুঞ্জের এই আয়োজনে যোগ দেন বিএনপির চেয়ারাপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঞ্চে আসার পর বিউগলে জাতীয় সংগীতের সুর বেজে উঠে। পরে ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন আমন্ত্রিত অতিথি ও দর্শনার্থীরা।

আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার পর চা চক্র পর্বে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং ২০২৪ সালের জুলাই অগাস্ট মাসে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের সব শহীদ, আহত ও অংশ নেওয়া সব মানুষকে স্মরণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর অবদান স্মরণ করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একাত্তর সালের রণক্ষেত্রে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনীর নৃশংস আক্রমণের পরপরই ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। এ কারণেই ২১ নভেম্বরকে মুক্তিযুদ্ধের একটা মাইলফলক হিসাবে গৌরবের সাথে পালন করা হয়।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মুক্তিকামী সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা জীবনের পরোয়া না করে, পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

এদেশের আপামর জনসাধারণকে সাহস যুগিয়েছে। মানুষের সাথে কঁধে কাঁধ মিলিয়ে জল, স্থল ও আকাশ পথে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশমাত্রিকাকে পরাধিনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে এনেছেন।

২০২৪ সালে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানেও সেনাবাহিনীর ‘অসামান্য অবদানের’ কথা স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দুহাজার চব্বিশের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান ও চলমান দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজেও সশস্ত্র বাহিনী বরাবরের মত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অব্যাহতভাবে মানুষের আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে দেশের জন্য ত্যাগ ও তৎপরতার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখবে।

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীকে সদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, একটি শান্তিপ্রিয় জাতি হিসাবে আমরা সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক ও শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানে বিশ্বাসী। তথাপি যে কোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদেরকে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

আগামী দিনে সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুঃখের সাথে বলতে হয়, ফ্যাসিস্ট আমলে বাহিনীগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো উপেক্ষিত ছিল।

অন্তর্বর্তী সরকার সব বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে দেশরক্ষা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার উদ্দেশ্যে বিএনসিসির কার্যক্রম বহুগুণ বৃদ্ধির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কয়েকজন হতাহত এবং বহু স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সেই দুর্যোগের কথা স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আজকে এমন একটি আনন্দের দিনেও আমরা সবাই ব্যথিত। হঠাৎ ভূমিকম্পে কয়েকজন ইন্তেকাল করেছেন। বহুমানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাদের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর: জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর নত

1

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস

2

গভীর রাতে সিলেটে ভূমিকম্প: রিখটার স্কেলে মাত্রা ৩.৫

3

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজা শনিবার দুপুর ২টায়

4

শহীদ হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান ইনকিলাব

5

৩ দিনব্যাপী তৃতীয় বাংলাদেশ জ্বালানি সম্মেলন শুরু ৬ ডিসেম্বর

6

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর নতুন এজলাস উদ্বোধন

7

নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৮ দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ম

8

ভোলার চরফ্যাশনে ঢালচর লঞ্চঘাট উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহন ও শ্রম

9

বনানীতে সড়ক জুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল, ৩০০ ফিটের সংবর্ধনাস্থলে

10

জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি তারেক রহমানের গভীর শ্রদ্ধ

11

মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাসে শুরু হলো ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম

12

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়: রাজশাহীতে মিষ্টি বিতরণ

13

জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা প

14

‘সোলজার’এর লুকে ঝলমলে শাকিব খান, বনানীতে ভক্তদের ঢল

15

অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা ৬ নভেম্ব

16

পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন ডন

17

নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যালোচনায় যমুনায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক

18

নীতিগত অগ্রাধিকার না থাকায় ২০৫০ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ল

19

টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা প্রদানে শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে হবে : স্ব

20