ক্রীড়া প্রতিবেদক : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে ফুরফুরে মেজাজে চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সিরিজের শুরুটা করল হতাশার হার দিয়ে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ ১৬ রানে হেরেছে টাইগাররা। টস জিতে আগে ব্যাট করে ১৬৫ রান সংগ্রহ করেছিল ক্যারিবীয়রা।
জবাবে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে দুই বল বাকি
থাকতেই ১৪৯ রানে সব উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
শুরুতে ও শেষের দিকে ভালো ব্যাটিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনিং জুটিতে পাওয়া ৫৯ রানের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে শেই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল শেষটায় ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেন। তাদের ব্যাটে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তোলে ক্যারিবীয়রা। ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
উদ্বোধনী ব্যাটার সাইফ হাসান ৭ বলে ৮ রান করে আউট হন আকিল হোসেনের বলে।
এরপর বেশ দ্রুত সাজঘরে ফেরেন তানজিদ হাসান (১৫) ও অধিনায়ক লিটন দাস (৫)।
টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাওহীদ হৃদয় ও তানজিম হাসান সাকিব। হৃদয় ২৫ বলে ২৮ রান করেন, সাকিব খেলেন ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস।
এই জুটিও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় চাপে পড়ে বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ (২০) ও রিশাদ হোসেন (৬) কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
শেষদিকে তাসকিন আহমেদের ১০ ও মোস্তাফিজুর রহমানের ১১ রান কেবল হারের
ব্যবধানই কমিয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সিলস নিয়েছেন ৩টি উইকেট। এ ছাড়া জেসন হোল্ডার নিয়েছেন ৩ উইকেট। আকিল হোসেন পেয়েছেন ২টি ও খারি পিয়েরে নিয়েছেন একটি।
এরআগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটাও ভালো হয়নি। তবে উইকেট ধরে খেলার পাশাপাশি নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেশনে মনোযোগ দেয় তারা।
অধিনায়ক শাই হোপের
আগ্রাসী ইনিংসে শেষ দিকে লড়াই জমে উঠেছিল।
ওপেনার অ্যালিক আথানেজ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখান। স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ আত্মবিশ্বাসে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ২৭ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
তার সঙ্গে ওপেনিং পার্টনার ব্র্যান্ডন কিং ছিলেন কিছুটা ধীরস্থির। শুরুতে বেশ কিছু বল ঠেকিয়ে রাখলেও তিনি দলের জন্য ভিত্তি গড়ে দেন।
কিংয়ের ৩৩ রান আসে ৩৬ বলে,
যেখানে ছিল একটি চার ও দুটি ছক্কা। এই দুই ওপেনারের ৫৯ রানের জুটি দলকে ভালো
সূচনা এনে দেয়।
আথানেজকে রিশাদ হোসেন বোল্ড করে ফেরানোর পর ক্রিজে নামেন অধিনায়ক শাই হোপ। ইনিংসের এই পর্যায়েই খেলার গতি বদলে যায়।
শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী শট খেলেন হোপ। স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ কিছু শট উপহার দেন। অন্যপ্রান্তে রভম্যান পাওয়েল খেলেন দুর্দান্ত।
তানজিম হাসান সাকিবের শেষ ওভারে তিনি পরপর তিন ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
মাত্র ২৮ বলে ৪৪ রান যোগ করেন তিনি।
তার ইনিংস সাজানো ১ চার ও ৪ ছয়ে। শেষ পর্যন্ত হোপের ২৮ বলে ৪৬ রান সঙ্গী করে
পাওয়েল ইনিংস নিয়ে যান ১৬৫ রানে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন
আহমেদ ছিলেন সফল। যদিও কিছুটা খরুচে ছিলেন,
তবে তার গতি ও ভ্যারিয়েশন দিয়ে টানা দুই বলে তুলে নিয়েছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ
উইকেট- ব্র্যান্ডন কিং ও রাদারফোর্ডকে। তিনি ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
অন্যদিকে, বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ছিলেন কৃপণ। তার ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান এসেছে, যদিও তিনি উইকেটশূন্য। রিশাদ হোসেনও নিয়েছেন একটি উইকেট।
তবে সাকিব ছিলেন সবচেয়ে খরুচে। ৪
ওভার বল করে তিনি দিয়েছেন ৪৭ রান।
মন্তব্য করুন