ওশান নিউজ প্রতিবেদক : প্রস্তাবিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ’-এর কয়েকটি ধারা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের খুচরা তামাক বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, খসড়া প্রস্তাবটি বর্তমান রূপে কার্যকর হলে নগরভিত্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসা ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের এই সংশোধনী প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার ঢাকার সাতজন খুচরা বিক্রেতা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, তামাকজাত পণ্যের ব্যবসা দেশের প্রায় ৪৪ লক্ষ মানুষের আয়ের উৎস। বিশেষ করে খুচরা বিক্রেতাদের মোট বিক্রয়ের বড় একটি অংশ আসে সিগারেট থেকে।
এমন পরিস্থিতিতে সিগারেটের জন্য পৃথক রিটেইল লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবকে অবাস্তব ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, অনেক ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমাণ দোকানির হোল্ডিং নম্বর না থাকায় এই নিয়ম পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে, যা প্রকারান্তরে দুর্নীতি ও হয়রানিকে উসকে দেবে।
বিবৃতিতে খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিক্রেতারা জানান, দেশের নিম্ন আয়ের ভোক্তারা সাধারণত প্রয়োজনের তাগিদে পণ্য খুচরা আকারে কেনেন। এই সুবিধা বন্ধ করে দিলে বৈধ বিক্রয় ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে অবৈধ বাজার বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া ভ্রাম্যমাণ বা ফেরি দোকান নিষিদ্ধের প্রস্তাবটি প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানকে সরাসরি ঝুঁকির মুখে ফেলবে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা ছাড়া হঠাৎ দোকান বন্ধ করে দিলে দেশে বেকারত্ব ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়তে পারে বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন।
বিক্রেতারা আরও জানান, জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব এবং আইন মেনে ব্যবসা করার বিষয়ে তারা একমত। তবে আইন প্রণয়নের সময় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
গত বছর উচ্চ পর্যায়ের উপদেষ্টা কমিটি অংশীজনদের নিয়ে সংলাপের
সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত প্রান্তিক বিক্রেতাদের মতামত নেওয়া হয়নি। তাই একটি কার্যকর
ও বাস্তবসম্মত আইন প্রণয়নে অবিলম্বে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার দাবি
জানিয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন