ওশান নিউজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ কার্বন বাজার ব্যবস্থাকে
কাজে লাগিয়ে এবং বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অথচ অন্যতম স্বল্প কার্বন
নিঃসরণকারী দেশ হিসেবে নিজের অবস্থানকে ব্যবহার করে তার জলবায়ু-সংবেদনশীলতাকে
অর্থনৈতিক সুযোগে পরিণত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সঠিক অংশীদারিত্ব ও নীতিমালা থাকলে বাংলাদেশ জলবায়ু-সংকটকে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে রূপ দিতে পারবে।
এ রূপান্তরে কার্বন বাজার
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বে এজ গ্যালারিতে আয়োজিত
‘ক্লাইমেট টক: এক্সপ্লোরিং এ রোবাস্ট কার্বন মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনায়
অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকাস্থ ডেনমার্ক দূতাবাস।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানায়, রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বব্যাপী
গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে বাংলাদেশের অংশ কম ০.৪ শতাংশ হলেও দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে
জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম।
তিনি বলেন,
এটিকে একদিকে জলবায়ু বৈষম্য হিসেবে দেখা যেতে পারে, আবার অন্যদিকে
নেতৃত্ব ও বিনিয়োগের সুযোগ হিসেবেও দেখা যায়।
বাংলাদেশের সবুজ রূপান্তনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত
করে রাষ্ট্রদূত বলেন, একটি
কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য কার্বন বাজার গড়ে তুলতে হলে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, স্পষ্ট নীতিমালা
এবং সরকার, বেসরকারি
খাত, নাগরিক সমাজ ও
আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন।
আলোচনায় সরকারি-বেসরকারি খাত, শিক্ষাঙ্গন ও উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৮০ জনেরও বেশি
প্রতিনিধি অংশ নেন। প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশের জন্য একটি স্বচ্ছ ও
অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্বন বাজার গড়ে তোলার সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কার্বন বাজার বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক শয়মাল বর্মন। তিনি বলেন, কার্বন বাণিজ্য শুধু নিঃসরণ কমানোর একটি উপায় নয়, এটি টেকসই উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ আহরণের এক শক্তিশালী মাধ্যমও।
বাংলাদেশ যদি একটি বিশ্বাসযোগ্য কার্বন
বাজার গড়ে তুলতে পারে, তবে তা
জলবায়ু লক্ষ্য, বিশেষ করে
জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের (এনডিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির
পথ খুলে দিতে পারে।
প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা নীতিমালা কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক
প্রস্তুতি, বেসরকারি
খাতের সম্পৃক্ততা, স্বচ্ছতা ও
বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিতের কৌশল নিয়ে মতবিনিময় করেন।
তাঁরা বলেন,
কার্বন বাণিজ্যের মাধ্যমে স্বল্প কার্বন নির্ভর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, করপোরেট টেকসই
উন্নয়ন বৃদ্ধি এবং প্যারিস চুক্তির অধীনে বাংলাদেশের এনডিসি বাস্তবায়নে সহায়তা করা
সম্ভব।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন
শাখার পরিচালক মির্জা শওকত আলী বলেন,
বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ু সমাধানের অগ্রণী
উদাহরণ হয়ে ওঠার। আমরা বর্তমানে একটি কার্বন বাজার কাঠামো তৈরি করছি, যার মাধ্যমে আমরা
বিনিয়োগ আকর্ষণ, উদ্ভাবন
উৎসাহিতকরণ এবং স্থানীয় সম্প্রদায় ও অর্থনীতির উপকারে আসবে এমন স্বল্প কার্বন
উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাই।
মন্তব্য করুন